অনুচ্ছেদ রচনা : বর্ষণমুখর দিন

বর্ষণমুখর দিন

আষাঢ়ের পথ ধরেই আসে বর্ষা । শ্রাবণে বর্ষা পায় পূর্ণ রূপ । সকাল থেকেই কালো মেঘে ছেয়ে আছে আকাশ। শ্রাবণের এই দিনে মেঘ-বৃষ্টির খেলা। গ্রীষ্মের দাবদাহে বর্ষা নিয়ে আসে স্বস্তির পরশ। বড় খেয়ালি এই বর্ষার দিন। কখনো অতিবর্ষণ, কখনো অল্পবর্ষণ, কখনো বা প্লাবন বা বন্যা। বর্ষণমুখর দিনে হঠাৎ অন্ধকার করে আসে, কখনো বা শুরু হয় বিজলির চমকানি। সবুজ শ্যামল গাছেরা ভিজতে থাকে অঝোর ধারায়। সমস্ত পশুপাখি নীড়ে আশ্রয় নেয়, মানুষও ঘরে থেকে উপভোগ করে বর্ষার সৌন্দর্য। দিনের বেলাতেও নিবিড় অন্ধকার চারপাশ আবৃত করে রাখে। একটানা বৃষ্টিতে ধান- পাট ক্ষেতের উপর দিয়ে বয়ে যায় বাতাসের ঢেউ। ডোবা-নালা থেকে ব্যাঙের ডাক, ঘরে দীর্ঘ কর্মহীন দিন। অঝোর ধারাবর্ষণ এই সময়ে মানুষের মনকে উদাস করে তোলে। বর্ষা মানবমনের উপর দারুণ প্রভাব বিস্তার করে। মানবমন হয়ে ওঠে চঞ্চল, পাওয়া-না-পাওয়ার বেদনা জেগে ওঠে মানুষের মনের কোণে। কবিহৃদয়ে বর্ষার আবেদন গভীর। কবি কালিদাস থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত বহু কবি বর্ষা নিয়ে কবিতা রচনা করেছেন। বর্ষা ও বিরহ নিয়ে লেখা হয়েছে কালিদাসের বিখ্যাত কাব্য ‘মেঘদূতম্', মৈথিলী কবি বিদ্যাপতি রচনা করেছেন বর্ষাবিরহের পদ, গোবিন্দদাস রচনা করেছেন বর্ষাভিসার বিষয়ক পদাবলি।

বর্ষণমুখর দিন

তবে একটানা বর্ষণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে সংকট ডেকে আনে। যারা কায়িক শ্রমের বিনিময়ে দিন এনে দিন খায় তাদের জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে এই সময়ে ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url