অনুচ্ছেদ রচনা : মিতব্যয়িতা
মিতব্যয়িতা
জীবনকে সুন্দরভাবে যাপন করার জন্য মিতব্যয়িতার প্রয়োজন অপরিসীম। পরিমিত ব্যয় করার অভ্যাসের নাম মিতব্যয়িতা। এটি মানুষের জীবনের একটি প্রধান গুণ। জীবনের সবক্ষেত্রে মিতব্যয়িতার দরকার পড়ে। কথায়, আচরণে, আয়-ব্যয়ে মিতব্যয়িতার প্রয়োজন সর্বাধিক। আয় বুঝে ব্যয় না করলে তার কপালে দুঃখ অনিবার্য। আয় বেশি হলেও দরকারের চেয়ে বেশি খরচ করাটা অপচয়মাত্র। মিতব্যয়ী মানুষ জীবনে কখনো সংকটে পড়ে না। মিতব্যয়ী হলে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা যায়। এই সঞ্চিত অর্থ দুর্দিনে অনেক কাজে লাগে। কেবল নিজের কাজে নয়, সঞ্চিত অর্থ অন্যের বিপদেও উপকারে লাগে। মিতব্যয়ী না হলে মানুষ ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে। দিনের আলোতে যদি কেউ শখ করে মোমের বাতি জ্বালিয়ে অহেতুক অপচয় করে তবে এমন একদিন আসবে যখন রাতের অন্ধকারেও তার ঘরে আলো জ্বলবে না। জীবনকে গুছিয়ে যাপন করার জন্যই মানুষ অর্থ আয় করে কিন্তু সেই অর্থ অযথা উল্লাসে, অসংযত বিলাসে ব্যয় করলে তার পরিণতি ভালো হয় না। মিতব্যয়িতা কেবল ব্যক্তিজীবনে নয়, সমাজজীবন, রাষ্ট্রীয় জীবন এবং আন্তর্জাতিকভাবেও মানুষের ও বিভিন্ন রাষ্ট্রের মিতব্যয়ী হতে হবে। রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের ক্ষেত্রে বিশেষ করে সংযমী না হলে দেশের কল্যাণ ও জবাবদিহিতা হুমকির মুখে পড়ে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ জনগণের সবার সম্পদ। তাই রাষ্ট্রের কল্যাণে এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে যাতে অর্থ অপচয় না হয় বা বাজে কাজে বিপুল পরিমাণ টাকা নষ্ট না হয়। আমাদের সম্পদ সীমিত কিন্তু জনসংখ্যা অধিক।
ফলে সব সামাজিক ও রাষ্ট্রিক উদ্যোগ হতে হবে জনকল্যাণমূলক ও উন্নয়নবান্ধব। অপ্রয়োজনে বেশি কথা বলাও স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। বাকসংযম ব্যক্তির দায়িত্ব ও ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলে। মিতব্যয়ী হলে জীবন সহজ ও কল্যাণময় হয়ে ওঠে।