ইন্টারনেট-এর গুরুত্ব বর্ণনা করে একটি ভাষণ রচনা কর

ইন্টারনেট-এর গুরুত্ব বর্ণনা করে একটি মঞ্চ ভাষণ প্রস্তুত কর

ইন্টারনেট-এর গুরুত্ব বর্ণনা করে একটি মঞ্চ ভাষণ প্রস্তুত কর।

এই আয়োজনের সম্মানিত সভাপতি, মাননীয় প্রধান অতিথি, সম্মানিত আলোচকবৃন্দ ও সুধীমণ্ডলী- আস্সালামু আলাইকুম । সভ্যতার যে যুগান্তকারী পথপ্রদর্শক পুরো বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনে আমাদের অগ্রযাত্রাকে বহুগুণে ত্বরান্বিত করেছে সেই মহা বিস্ময়-এর নাম হলো ইন্টারনেট । স্বতঃস্ফূর্তভাবে নেটওয়ার্ক-এর পর নেটওয়ার্ক পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী যে মহা যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠেছে তাই হলো ইন্টারনেট । জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা ও প্রসারের এই যুগে ইন্টারনেট ছাড়া একটি দিনও আমরা কল্পনা করতে পারি না ।

সম্মানিত সুধী
প্রতিনিয়ত ইন্টারনেটের বহুমুখী ব্যবহারে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় ও প্রসারে এসেছে বিপ্লব ও বিবর্তন । কিন্তু ইন্টারনেটের জন্ম বেশিদিন আগে নয় । ১৯৬৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ 'ARPANET' নামে একটি ক্ষুদ্র পরিসরে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করে । সেখান থেকে সবেগে ত্বরান্বিত হয়ে ইন্টারনেট সারা বিশ্বকে আমাদের সামনে হাজির করেছে । বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, জ্ঞান-বিজ্ঞান, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, ব্যবসা-বাণিজ্য, গণমাধ্যম ইত্যাদির ব্যবহার এখন পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে বসেই সম্ভব ইন্টারনেটের কল্যাণে । পৃথিবীর সকল দেশের মানুষের সাথে যোগাযোগের দ্রুততম ও সহজলভ্য পন্থা হলো ইন্টারনেট ।

সমবেত সুধী
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে কিছু কথা না বললেই নয় । আমি সংক্ষেপে কিছু দিক উল্লেখ করছি । গোটা বিশ্বে প্রযুক্তির যত ব্যবহার হয়েছে এবং হচ্ছে সেগুলো সম্পর্কে আমরা অবগত হতে পারছি ইন্টারনেটের কল্যাণে । বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন, প্রসার ও শিক্ষা গ্রহণে আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে ইন্টারনেট ।

জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা এবং প্রসারের সিংহভাগই এখন ইন্টারনেটের হাতে । পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচি, রেফারেন্স বুক, লাইব্রেরি এমনকি ক্লাস লেকচারও আমরা সহজে ইন্টারনেটে পাই ।

রোগ নির্ণয়, ঔষধ নির্বাচন, ঔষধ প্রস্তুত ইত্যাদি প্রযুক্তি এখন অনেকটাই ইন্টারনেট নির্ভর । টেলিমিডিসিন ও অনলাইন ডাক্তারি সেবাও সম্ভব করেছে ইন্টারনেট ।

ব্যক্তিগত, রাষ্ট্রীয়, সামাজিক, বাণিজ্যিক ইত্যাদি যোগাযোগ এখন বেশিরভাগই ইন্টারনেট নির্ভর। এক্ষেত্রে ই-মেইল ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো আমাদের ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করছে ।
ই-বিজনেস, ই-কমার্স, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ইত্যাদি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্য বিদ্যুৎগতি পেয়েছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ।

দেশি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সকল বার্তা এখন ইন্টারনেটেই সহজলভ্য । সকল দেশের পত্র-পত্রিকা ও গণমাধ্যমে আমরা মুহূর্তে প্রবেশ করতে পারি। ইন্টারনেটই এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে ।

প্রিয় সুধী
ইন্টারনেট ব্যবহারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা যেমন রয়েছে তেমনি প্রয়োজন রয়েছে এর ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করার । ইন্টারনেটের প্রতি আসক্তি আমাদের সৃজনশীলতা, নৈতিকতা, নিয়মানুবর্তিতা ইত্যাদি মহান গুণগুলো চিরতরে ধ্বংস করে দিতে পারে । সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ছড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী কার্যক্রম।

সুতরাং আমাদের সকলের উচিত সতর্কতার সাথে ব্যবহার করে বিজ্ঞানের এই বিস্ময়কে আমাদের জীবনের উৎকর্ষ সাধনের কাজে লাগানো ।
পরিশেষে সমবেত সুধীমণ্ডলীকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে শেষ করছি ।
Next Post Previous Post