বাংলা রচনা : পল্লী ও নগর জীবনে বর্ষা

বাংলা রচনা : পল্লী ও নগর জীবনে বর্ষা
পল্লী ও নগর জীবনে বর্ষা

পল্লী ও নগর জীবনে বর্ষা

[সংকেত : ভূমিকা; বর্ষা ঋতুর পরিচয়; বর্ষার আগমন; বর্ষার স্বরূপ; পল্লীজীবনে বর্ষা; পল্লীর জনজীবনে বিঘ্ন সৃষ্টি; বর্ষায় পল্লীর যােগাযােগ ব্যবস্থা; বর্ষায় কৃষকের অবস্থা; বর্ষাকালে গৃহবন্দিত্ব; বর্ষাকালীন রােগ-ব্যাধি; জেলেদের মুখে সুখের হাসি; প্রকৃতি জীবন্ত হয়ে ওঠে; নগর জীবনে বর্ষা; বর্ষায় নগর জীবনে দুর্ভোগ; বর্ষায় নগরের যােগাযােগ ব্যবস্থা; কাজের সময়ে বিঘ্ন সৃষ্টি; দ্রব্যমূল্য ও যাতায়াত ভাড়া বৃদ্ধি; জলাবদ্ধতা ও রােগ সৃষ্টি; ময়লা-আবর্জনা নির্মূল; উপসংহার ।]

ভূমিকা : প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের এই বাংলাদেশ। অপরূপ এই দেশ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ হিসেবে পরিচিত। সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা আমাদের বাংলাদেশে পালাক্রমে ছয়টি ঋতু আসে। তার মধ্যে অন্যতম ঋতু হলাে বর্ষা। বর্ষায় বিরহকাতরতায় বাঙালির মন বেদনায় সিক্ত হয়ে ওঠে। বর্ষাকালে আকাশের মনের বেদনা কান্না হয়ে ঝরে পড়ে, আর মানুষের মনের বিরহ যেন আকাশের সাথে একাত্মতা ঘােষণা করে। বাংলাদেশের জনজীবন ও মানব হৃদয়ের সাথে বর্ষা ওতপ্রােতভাবে জড়িত। বর্ষা নগর ও পল্লীর মানুষের জীবনের সুখ-দুঃখের যৌথ অনুভূতি নিয়ে হৃদয়ের দরজায় কড়া নাড়ে। বাঙালির অন্যতম প্রিয় ঋতু বর্ষা।

বর্ষা ঋতুর পরিচয় : বাংলাদেশে বারাে মাসে ছয়টি ঋতু। দুই মাস পরপর একেকটি ঋতু পালাবদল করে। এই ঋতুচক্রে বর্ষার স্থান। | দ্বিতীয়। আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই মাস চলে বর্ষা ঋতু। তবে এই ঋতুর প্রভাব চলে আরও কিছুদিন পর্যন্ত। বর্ষা ঋতু পালাবদলের দিক দিয়ে দ্বিতীয় হলেও সৌন্দর্যের দিক দিয়ে অনন্য। বর্ষার আগমন : গ্রীষ্মের অগ্নিতাপে প্রকৃতি ও জনজীবন যখন দগ্ধ হয়ে ওঠে তখন শান্তির পরশ নিয়ে বর্ষার আগমন ঘটে। গ্রীষ্মের। মেঘমুক্ত আকাশে হঠাৎ করে গুরুগুরু ধ্বনি তুলে মেঘ ভেসে বেড়াতে থাকে। কালাে মেঘের আনাগােনা আর গুরুগুরু গর্জনে। প্রকৃতিতে নতুন আবহ সৃষ্টি হয়। সকাল-সন্ধ্যায় বাড়ির আনাচে-কানাচে ব্যাঙ,ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ। সূর্যের আলাে লুকোচুরি খেলতে খেলতে হঠাৎ করে মুষলধারে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির পানিতে ভেসে যায় খড়-কুটা, ধূলি-বালি । নবীন মেঘের গর্জন, উদ্দামতার সাথে বৃষ্টি। হয়ে ঝরে পড়া, আকাশে অকস্মাৎ বিদ্যুৎ চমকানাে, প্রকৃতির নবীন সাজ, কৃষকের কর্মব্যস্ততা সবকিছু মিলে সর্বত্রই রূপের খেলা শুরু হয়।

বর্ষার স্বরূপ : গ্রীষ্মের খরতাপের পরেই আগমন ঘটে বর্ষার । বর্ষার সরব আবির্ভাবে খাল-বিল, নদী-নালা, মাঠ-ঘাট সবকিছু পানিতে টইটম্বর হয়ে ওঠে। চারদিকের প্রকৃতিতে সজীবতা ফিরে আসে। আকাশে মেঘের ঘনঘটা চলতে থাকে। মাঝে মাঝে এক পশলা বৃষ্টি পড়ে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরক্ষণেই আকাশে ঝলমলে রােদের দেখা মেলে। কখনাে কখনাে টানা বর্ষণে চার-পাঁচ দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলে না। তাইতাে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন—

আষাঢ় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল, গেল রে দিন বয়ে,
বাঁধন হারা বৃষ্টিধারা ঝরছে রয়ে রয়ে— 

পল্লীজীবনে বর্ষা : অপরূপ বাংলাদেশের প্রাকতিক সৌন্দর্যের সবচেয়ে বড়াে অংশ পল্লীগ্রাম। সবুজে ঘেরা পল্লীর চিরচেনা রূপই যেন বাংলার প্রকৃতির বড়াে সম্পদ। বর্ষাকালে সবুজে ঘেরা পলিগ্রাম আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে, তবে জনজীবনে কিছুটা বিপর্যয় নেমে আসে। চৈত্রের শুকনা খাল, বিল, নদী, নালা বর্ষায় জীবন্ত হয়ে ওঠে। বাড়ির চারপাশে পানি থৈ থৈ করে। তাই বর্ষার দিনে পল্লীর জনজীবনে যেমন আনন্দ নেমে আসে তেমনি সৃষ্টি হয় নানান অনাহুত সমস্যার ।

পল্লীর জনজীবনে বিঘ্ন সৃষ্টি : বর্ষা কালে পল্লীর জনজীবনে প্রতিটি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। কখনাে কখনাে টানা বর্ষণে মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়ে। টানা বর্ষণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। চারদিকে পানি থাকায় পারাপারে অসুবিধা হয়। প্রবল বর্ষণের ফলে পল্লীর মানুষকে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

বর্ষায় পল্লীর যােগাযােগ ব্যবস্থা : বর্ষা কালের শুরুতে পল্লীর জনজীবনের জন্য শান্তির পরশ নিয়ে আসে বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টি কিছুদিন স্থায়ী হলে জনজীবনে নেমে আসে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ, ব্যাহত হয় যােগাযােগ ব্যবস্থা। ভারী বর্ষণের ফলে গ্রামের রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যায়। কাঁচা বা আধা পাকা রাস্তা ভেঙে পড়ে। বাড়ির চারপাশ ও রাস্তাঘাট কাদা মাখা থাকে। কর্দমাক্ত পিচ্ছিল রাস্তায় পা পিছলে পড়ার আশঙ্কা তাড়া করে বেড়ায়। বাড়ি থেকে বের হতেই নৌকা বা ভেলার প্রয়ােজন হয়। বর্ষাকালে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে পারে না। বাড়ির বাইরে যােগাযােগ রক্ষা করতে পল্লীবাসীকে চরম দুর্ভোগ পােহাতে হয়।

বর্ষায় কৃষকের অবস্থা : বাংলাদেশের জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগই কৃষক। কৃষকরা মাঠে ফসল ফলিয়ে জীবন বাঁচায়। বর্ষাকালে ভারী বৃষ্টির ফলে ফসলের জমি পানিতে ডুবে যায়। পাকা ধান ঝরে পড়ে, ঘরের ধান রােদের অভাবে নষ্ট হয়। ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট বন্যায় কৃষকরা কর্মহীন হয়ে পড়ে। ফলে সংসারের খরচ চালানাে তাদের জন্য নিদারুণ কষ্টের হয়ে পড়ে। তাছাড়া ফসল নষ্ট হওয়ায় কৃষকদের আর্থিক ক্ষতি হয়। আর বন্যা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে কৃষকের দুঃখের অন্ত থাকে না। তাদের আউশ ফসল। তলিয়ে যায়। কবির ভাষায়—

বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর,
আউশের ক্ষেত জলে ভরভর। 


বর্ষাকালে গৃহবন্দিত্ব : বর্ষা কালে পল্লীর মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। গৃহবন্দি হয়ে পড়ে তারা। চারদিকে কাদা আর পানির খেলা চলে। রাস্তা ডুবে যাওয়ায় মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারে না। ছেলেমেয়েদের পড়ালেখা, খেলাধুলা, স্কুলে যাওয়া সব বন্ধ হয়ে যায়। তখন তারা সবকিছুতে একঘেয়েমি অনুভব করতে থাকে। কোনাে কোনাে দিন এমন বাদলা নামে যে, কেউ ঘরের বাইরে। যাওয়ার কথা চিন্তাই করে না। বর্ষার এমন রূপ দেখেই রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন—

নীল নবঘনে আষাঢ় গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে।
ওগাে, আজ তােরা যাস নে ঘরের বাহিরে। 

বর্ষাকালীন রােগ-ব্যাধি : বর্ষা কালে প্রচুর বৃষ্টি হয়। আর এমন বৃষ্টির ফলে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর সবকিছু পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে গ্রামাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে জনজীবনে নানা দুর্ভোগের পাশাপাশি বিভিন্ন রােগ-ব্যাধি দেখা দেয়। বন্যার পানিতে বিভিন্ন দিক থেকে মৃত প্রাণী ভেসে আসে। এতে পানি ও পরিবেশ দূষিত হয়। তাছাড়া নানা কারণে বন্যাদুর্গত এলাকায় পানিবাহিত রােগ দেখা দেয়। ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, টাইফয়েড, জন্ডিস, ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর ইত্যাদি রােগ মহামারি আকার ধারণ করে।

জেলেদের মুখে সুখের হাসি : বর্ষাকালে যখন গ্রামের মাঠ-ঘাট পানিতে ডুবে যায় তখন জেলেদের মুখে হাসি ফোটে। বর্ষার নতুন। পানি পেয়ে খাল-বিলের মাছ আনন্দে মাতােয়ারা হয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে। ডিমওয়ালা মাছ এত বেশি বাচ্চা ফুটায় যে, পল্লীগ্রাম মৎস্য সম্পদে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। নদীতে ঘুরে বেড়ায় ইলিশের ঝক। চারদিকে মাছের এত সমাহার দেখে জেলেদের মনে সুদিনের প্রত্যাশা জাগে। জেলেদের জালে এত বেশি মাছ ধরা পড়ে যে, সহসা তাদের সংসারের অভাব দূর হয়ে যায়, তাদের মুখে সর্বদা হাসি লেগেই থাকে। বর্ষাকালে মাছ বিক্রি করে তারা কিছুটা সঞ্চয় করে রাখে ভবিষ্যতের জন্য।

প্রকৃতি জীবন্ত হয়ে ওঠে : গ্রীষ্মের প্রখর রােদে বাংলাদেশের সবুজ-শ্যামল প্রকৃতি শুষ্ক ও মলিন হয়ে পড়ে। আষাঢ়ের বৃষ্টির স্পর্শে মৃতপ্রায় প্রকৃতি প্রাণ ফিরে পায় । চারপাশে সবুজের সমারােহ দেখা দেয়। গ্রীষ্মের রুক্ষতা বিলীন করে দিয়ে বাংলার প্রকৃতি নব । উদ্যমে সজীব হয়ে ওঠে। বর্ষাকালে যেমন চারপাশে সবুজের সমারােহ দেখা যায় তেমনি খাল-বিল, ডােবা-নালায় ফুটে থাকা শাপলা ও পদ্ম আমাদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। পানির ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে শাপলার নৃত্য যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ দৃশ্য।

নগর জীবনে বর্ষা : বর্ষার দিনে পল্লী ও নগরে টাপুর-টুপুর বৃষ্টি পড়ার বিষয়ে কোনাে ভেদাভেদ নেই। তবে ভিন্নতা রয়েছে বর্ষার দিনে জনজীবনে দুর্ভোগের বিষয়ে। বর্ষার এক পশলা বৃষ্টি নগর জীবনে শান্তির সুশীতল পরশ নিয়ে আসে। কিন্তু অতিবর্ষণের ফলে নগর জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগের পালা।

বর্ষায় নগর জীবনে দুর্ভোগ : একাধারে ভারী বর্ষণের ফলে নগরের মানুষ চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়। মানুষের কর্মব্যস্ততায় হঠাৎ ছেদ পড়ে, সবকিছুতে নেমে আসে স্থবিরতা। ফলে স্বাভাবিক কর্মব্যস্ততার মধ্যে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয় । প্রবল বর্ষণের ফলে মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়ে, যথাসময়ে কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত না হওয়ার কারণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

বর্ষায় নগরের যােগাযােগ ব্যবস্থা : বর্ষা কালে নগর জীবনে যােগাযােগের ক্ষেত্রে চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। অতিবৃষ্টির ফলে যেমন মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়ে তেমনি রাস্তা-ঘাটে পানি জমে ছােটোখাটো নদীর রূপ ধারণ করে। ভারী বর্ষণের ফলে নিচু এলাকা বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়, কোনাে কোনাে জায়গায় রাস্তা ভেঙে পড়ে। পুল, কালভার্ট নষ্ট হওয়া ও রাস্তা প্রাবিত হওয়ার ফলে দুর্ঘটনার পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে যােগাযােগের ক্ষেত্রে নগরবাসীকে পােহাতে হয় চরম দুর্ভোগ।

কাজের সময়ে বিঘ্ন সৃষ্টি : নগরের মানুষ কর্মব্যস্ত জীবন অতিবাহিত করে। অফিস, আদালত, ব্যাংক, স্কুল, কলেজ, ব্যবসায় সবকিছুই একটি নির্দিষ্ট সময়মতাে চলে । প্রচুর বৃষ্টিতে শহরের রাস্তা প্রাবিত হওয়ার কারণে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। ফলে কেউ সময়মতাে কর্মস্থলে পৌঁছাতে পারে না। এতে কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। আবার বৃষ্টির কারণে সময়মতাে বাসায় ফিরতে পারে না। ফলে অফিসে অথবা গাড়িতে অলস সময় কাটাতে হয় । সময়মতাে যথাস্থানে পৌছাতে না পারায় নগর জীবনের শৃঙ্খলা নষ্ট হয়।

দ্রব্যমূল্য ও যাতায়াত ভাড়া বৃদ্ধি : প্রবল বর্ষণের ফলে যােগাযােগ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটায় শাক-সবজি সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। এ। সুযােগে কোনাে কোনাে অসাধু ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে। আবার যানবাহন চালকরাও অনেক বেশি ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। ফলে। বর্ষাকালে নগর জীবনে সাধারণ মানুষ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয় ।

জলাবদ্ধতা ও রােগ সৃষ্টি : বর্ষাকালে রাস্তাঘাট, গলি ও বাসার আশেপাশে বৃষ্টির পানি জমে থাকে। শহরের নর্দমার ময়লা পানি আর বৃষ্টির পানি মিলে চরম দুর্গন্ধ ছড়ায়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ধীর হওয়ার ফলে নােংরা পানিতে চলাচল করে শরীরে চুলকানি ও ঘা দেখা দেয় । জলাবদ্ধতার ফলে মশা-মাছির উৎপাত বেড়ে যায় । মশার কামড়ে যেমন শরীরে রােগ দেখা দেয় তেমনি মশা-মাছি নানা প্রকার রােগ-জীবাণুর দ্রুত বিস্তার ঘটায়। তাছাড়াও পানিবাহিত রােগ মহামারি আকার ধারণ করে।

ময়লা-আবর্জনা নিমূল : বর্ষা কালের বৃষ্টির পানি শহরের ময়লা-আবর্জনা দূর করে শহরকে পরিচ্ছন্ন করে তােলে। শহরের ধুলাবালি বৃষ্টির পানিতে ভেসে যায়। এতে ময়লা-আবর্জনা নির্মূল হয়ে পরিবেশ দূষণমুক্ত হয়। সুতরাং বলা যায়, বর্ষা শহরের পরিবেশকে বাঁচার উপযােগী করে তােলে। শহরের বর্জ্যরাশি অপসারণে নিঃসন্দেহে শহরবাসীর উপকার করে বর্ষাকালের বৃষ্টি।

উপসংহার : ঋতু বৈচিত্র্যের এই বাংলাদেশে ছয়টি ঋতুর মধ্যে দ্বিতীয় ঋতুটি হলাে বর্ষা। বাংলাদেশের প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের হৃদয়ে আনন্দের জোয়ার সৃষ্টি করে বর্ষাকাল । এ ঋতুতে আনন্দ ও আবেগ দুটোই ধরা দেয় । আপন ঐতিহ্য আর নিজস্ব সম্পদ নিয়ে বাঙালির প্রাণের ঋতু বর্ষা ধরা দেয় বৃষ্টির পসরা নিয়ে। বর্ষার স্পর্শে আমাদের মন যেমন আনন্দে নেচে ওঠে তেমনি সবুজে ঘেরা বাংলার প্রকৃতি সজীব হয়ে ওঠে। তবে বর্ষাকালে পল্লী ও নগরবাসীকে অনেক সময় দুর্ভোগ পােহাতে হয়।

Next Post Previous Post