অভিজ্ঞতা বর্ণনা : নুহাশপল্লীতে একদিন

অভিজ্ঞতা বর্ণনা : নুহাশপল্লীতে একদিন

নুহাশপল্লীতে একদিন

বাংলাদেশের জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদ। তারই প্রতিষ্ঠিত নুহাশপল্লী সকলকেই আকৃষ্ট করে। বিশেষ করে তিনি পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার পর তাঁর স্মৃতিবিজড়িত নুহাশপল্লী দেখার বাসনা আরও প্রবল হয়ে উঠল । সেদিন সােমবার সকাল ৮টায় যাত্রা শুরু করলাম । মতিন আর জুলফিকার আমাদের নাশতার প্যাকেটগুলাে দিয়ে দিল । বেশ মজা করে সেগুলাে খাওয়া হলাে। বাস দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকল । নিমিশেই যেন আমরা গাজীপুর ছাড়িয়ে একেবারে নুহাশপল্লীর কাছাকাছি এসে পৌছালাম। দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল প্রকৃতির অনিন্দ্যসুন্দর এক পরিবেশে নুহাশপল্লী । সত্য কথা বলতে কি লেখক যেমন মনের মাধুরী মিশিয়ে নানা গল্প, উপন্যাস, নাটক, চিত্রনাট্য লিখেছিলেন তেমনি আপন হাতেই তিনি নুহাশপল্লীতে লাগিয়েছেন দেশ-বিদেশ থেকে নিয়ে আসা নানারকম ফুল-ফলের বৃক্ষ । এর ভেতরে প্রবেশ করেই লেখকের অশরীরী উপস্থিতি আমাদের পেয়ে বসলাে। জুলফিকার তাে হুমায়ূন আহমেদের ব্যক্তিগত জীবনের নানা গল্প করে নুহাশপল্লীকে মাতিয়ে তুললাে। আমরা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে ওর কথাগুলাে শুনলাম; লেখক সম্বন্ধে আরও অনেক কিছু জানলাম। এবার জুলফিকারের প্রস্তাবে আমরা সবাই হুমায়ুন আহমেদের সমাধির পাশে দাঁড়িয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করলাম। কখন যে চোখে পানি এসেছে, আমরা তা টেরই পাইনি । কিন্তু তবুও কেন জানি মনে হয়, লেখক দূর থেকে আমাদেরকে দেখছেন, অথবা ঐখানে বসেই দেখছেন হয়তাে; হয়তাে বা সেটি এ মর্তের কোনাে মানুষের চোখে পড়বে না কোনােদিন। তারপরেও তিনি আমাদের মাঝে, অসংখ্য ভক্ত পাঠক-শ্রোতা-দর্শকের মাঝে বেঁচে থাকবেন। মনে হলাে কবি রবীন্দ্রনাথ | ঠাকুরের সেই গানের চরণ
নয়ন সমুখে তুমি নাই নয়নের মাঝখানে নিয়েছে যে ঠাই ।

Next Post Previous Post