অনুচ্ছেদ রচনা : যৌতুক প্রথা

অনুচ্ছেদ রচনা : যৌতুক প্রথা
অনুচ্ছেদ রচনা : যৌতুক প্রথা 


যৌতুক প্রথা 

যৌতুক প্রথা আমাদের দেশের ভয়াবহ এক সামাজিক সমস্যা হলাে যৌতুক প্রথা। বিয়ের সময় বরপক্ষ কনেপক্ষের কাছ থেকে যে টাকা, স্বর্ণ ও নানা রকমের সামগ্রী গ্রহণ করে থাকে তাই যৌতুক । অশিক্ষা, দারিদ্র্য এবং নারীদের অবমূল্যায়নই এ সমস্যার মূল কারণ। যৌতুক প্রথার প্রচলন কবে থেকে শুরু হয়েছে তা বলা যায় না, তবে আমাদের সমাজে অনেক নারীকে যৌতুকের বলি হতে হয়েছে এবং বর্তমানেও হচ্ছে। একটি মেয়ে দেখতে অসুন্দর হলে, বর মােটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মেয়েটিকে বিয়ে করে থাকে এবং বিয়ের পরেও তাকে বরপক্ষের চাহিদা পূরণ করতে হয়। কন্যার বাবার অবস্থা হয় শােচনীয়। যৌতুকের কারণে নারীর মৌলিক অধিকার ক্ষুন্ন হয়, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ফলে অনেক সময়ে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে থাকে। ধনী-দরিদ্র উভয় সমাজেই যৌতুক প্রথার প্রচলন আছে। তবে দরিদ্রদের ক্ষেত্রে এটা অভিশাপ বয়ে আনে। মেয়েদের যৌতুক না দেওয়ার কারণে শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়, এমনকি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়। সমাজের এই ভয়াবহ সমস্যা সমাধান করতে হলে সমাজের | সব মানুষকে সচেতন হতে হবে। নারী-পুরুষ অর্থাৎ বিবাহযােগ্যদেরও একটা ভূমিকা আছে। শিক্ষিত নারী-পুরুষকে যৌতুক না নিয়ে  এবং না দিয়ে বিয়ে করে অন্যদের উৎসাহিত করতে হবে । সমাজে নারীদের শিক্ষার উন্নয়ন ঘটাতে হবে এবং তাদেরকে কর্মে উৎসাহিত করতে হবে। নারীদের নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। নারীর প্রতি পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। নারীদের মানুষ হিসাবে মূল্যায়ন করতে হবে। কনেপক্ষের কাছ থেকে যৌতুক নিয়ে দারিদ্র্য মােচনের চিন্তা না করে নিজের আত্মসম্মান প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পরিশ্রমের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর সমন্বিত প্রচেষ্টায় সংসার গড়ে তুলতে হবে। তবেই পারিবারিক বন্ধন অটুট থাকবে, পরিবারে শান্তি আসবে এবং যৌতুক নামক ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি থেকে আমাদের সমাজ মুক্ত হবে।

Next Post Previous Post