বাংলা রচনা : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় আইসিটি এর অবদান
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় আইসিটি-এর অবদান
সূচনা : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় আইসিটি-এর অবদান অপরিসীম। আইসিটি-এর সুফলে আমরা দেশকে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে সর্বক্ষেত্রে অনেক অবদান রাখতে পেরেছি। বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বে তথ্য প্রযুক্তির অনেক উন্নতি ঘটেছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশেও লেগেছে প্রযুক্তির নামের জাদুর কাঠির ছোঁয়া। যার নাম ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ' । ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় আইসিটি-এর অবদান নিচে সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করা হলো—
শিক্ষাক্ষেত্রে : শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষকের লেকচার বা বক্তব্য ভিডিও করে প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেয়ালে সাদা পর্দায় তা প্রদর্শন করা যায়। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে এ পদ্ধতিতে ঘরে বসেও শিক্ষাগ্রহণ করা যায়। নিজস্ব বই না থাকলেও, লাইব্রেরিতে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না— ওয়েবসাইট থেকে খুঁজে নিয়ে তা পড়ে ফেলা যায় ।
চিকিৎসা ক্ষেত্রে : বিজ্ঞানীদের সাধনায় একদিকে যেমন আবিষ্কৃত হয়েছে জটিল রোগের ঔষধ, তেমনি চিকিৎসার পদ্ধতিও ক্রমে ক্রমে সহজ হয়ে আসছে। এক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপিত হলে ডাক্তারের কাছে সরাসরি উপস্থিত না হয়েও অনলাইন এর মাধ্যমে ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ করা যায় ৷
কৃষিক্ষেত্রে : বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে কৃষিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্ভাবিত হয়েছে উন্নতজাতের বীজ, পরিবেশ বান্ধব সার ও উচ্চফলনশীল প্রজাতির শস্য। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে কৃষির নানা বিষয়ে তথ্য জেনে তা কাজে লাগাতে পারে ।
নিরাপত্তা বিধানে : এক্ষেত্রে সিসি ক্যামরা স্থাপন ও ইন্টারনেটের সাথে কম্পিউটারের সংযোগ ঘটিয়ে নিরাপত্তা বিধান করা সম্ভব। দুষ্কৃতিকারীরা কোনো অঘটন ঘটিয়ে পালিয়ে গেলেও পরবর্তীতে ক্যামরার বদৌলতে ধরা পড়তে বাধ্য ।
যোগাযোগের ক্ষেত্রে : বর্তমানে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাহায্যে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার অনেককিছুই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। বিশেষ করে আকাশপথ এখন কম্পিউটার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন গ্রহে রকেট উৎক্ষেপণ করা হলে যোগাযোগ থাকছে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাথে ।
ব্যাংক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে : কম্পিউটার সিস্টেম ব্যাংক ব্যবস্থাকে গতিশীল করে তুলেছে। সকল ধরনের সেবা এখন অনলাইনে সম্পন্ন হচ্ছে । একজনের হিসাব থেকে অন্য কারও হিসাবে মুহূর্তের মধ্যে টাকা পাঠানো যায় ।
অনলাইন তথ্যকেন্দ্র স্থাপন : বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি তথ্যসেবা জনসাধারণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব অনলাইন তথ্যসেবা স্থাপনের মাধ্যমে। বিভিন্ন সেক্টরে সার্ভার স্টেশন স্থাপিত হলে জনগণ বিভিন্ন ডাটা ও তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে । ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে ওঠার স্বপ্ন বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত হবে ।
উপসংহার : বর্তমান বিশ্বে যে জাতি তথ্যপ্রযুক্তিতে যত বেশি দক্ষ তাদের সার্বিক অবস্থাও তত বেশি উন্নত। পরিবর্তনশীল পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তিকেন্দ্রিক জ্ঞানভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রচলন করতে হবে। তবেই সোনার বাংলাদেশ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে' পরিণত হবে।