অনুচ্ছেদ রচনা : গ্রিন প্রযুক্তি
গ্রিন প্রযুক্তি
পৃথিবী আজ তার বিশুদ্ধ রূপ হারিয়ে ফেলেছে যার জন্য প্রধানত দায়ী হচ্ছে মানুষ। আর এর প্রভাবে মানুষই আজ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। দেরিতে হলেও মানুষ বুঝতে পেরেছে এই পরিবেশ রক্ষা করার জন্য অতি সত্বর কোনো ব্যবস্থা নেয়া খুব জরুরি। সেই লক্ষ্যে চলছে নানা গবেষণা আর পরীক্ষা নিরীক্ষা। আর এর ফল স্বরূপ আবিষ্কৃত হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব নানারকম প্রযুক্তি। পরিবেশ বান্ধব এসব প্রযুক্তিকে বলা হয় 'গ্রিন টেকনোলজি'। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের হুমকি মোকাবেলায় গ্রিন প্রযুক্তির' ভূমিকা অতুলনীয়। গ্রিন প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। প্রযুক্তির সফল প্রয়োগে আজ বৈশ্বিক পরিবেশে বসবাসে উপযোগী হয়ে উঠছে। উৎপাদিত পণ্যের চিরায়ত 'One time use' বা 'এক চাক্রিক ব্যবহার' বন্ধ করে তার পুনর্ব্যবহার বা পুনর্গঠনের পদ্ধতি উদ্ভাবন করে পরিমিত সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব। বস্তুতপক্ষে সবুজ প্রযুক্তির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে শক্তি।
বিকল্প শক্তির উদ্ভাবন, শক্তি উৎপাদন এবং পরিবেশবান্ধব উপায় উদ্ভাবন করাই হচ্ছে সবুজ প্রযুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য। কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে নয়, বরং যে উপাদানগুলো আমাদের মাঝে ফ্রি'তে পাওয়া যায় সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে এনার্জি উৎপাদন করা, যাতে বেশি দক্ষ এনার্জি পাওয়া যায় সাথে কম আবর্জনা, যেটা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবে। কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ বা নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ না উৎপাদিত করে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করে কাজে লাগানো বেশি পরিবেশ বান্ধব। রাসায়নিক পণ্যসমূহের উৎপাদন, নকশা ও ব্যবহার পদ্ধতিসমূহ এমনভাবে নির্ধারণ করা যাতে ক্ষতিকর পদার্থসমূহের উৎপাদন ও ব্যবহার সর্বোচ্চ পরিমাণে হ্রাস পায় । সবুজ রসায়ন যেটি রাসায়নিক পদার্থসমূহের এমন ব্যবহার নির্দেশ করে যাতে করে তা পরিবেশবান্ধব এবং সর্বোচ্চ কার্যকারিতা লাভ করে। সবুজ ন্যানোপ্রযুক্তির মাধ্যমে খুব সূক্ষ্মভাবে পরিবেশের স্বাভাবিকতা রক্ষা করে প্রয়োজনীয় কার্যাবলি সম্পাদন করা যাবে। সবুজ প্রযুক্তির সবচেয়ে আলোচিত মাধ্যম হলো রিসাইক্লিং বা পুনঃচক্রায়ন। এর মাধ্যমে পরিবেশে উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থসমূহের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়।
যেমন—বর্জ্য পদার্থসমূহ শহুরে/উদ্ভিদ বর্জ্য এবং মানুষ/প্রাণিসমূহের বর্জ্য । উদ্ভিজ্জ বর্জ্য বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সার হিসেবে রিসাইক্লিং করে ব্যবহার করা যায়। নবায়নযোগ্য শক্তি প্রথাগত জ্বালানি প্রক্রিয়ার চারটি ভিন্নক্ষেত্রকে প্রতিস্থাপন করে যথা বিদ্যুৎ উৎপাদন, তাপীয়করণ, গাড়ির জ্বালানি এবং গ্রামীণ শক্তি কার্যক্রম এর মাধ্যমে গ্রিন প্রযুক্তির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব।