ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে প্রয়ােজনীয় পরামর্শ জানিয়ে ছােটো ভাইকে চিঠি লেখ

ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে প্রয়ােজনীয় পরামর্শ জানিয়ে ছােটো ভাইকে চিঠি লেখ

ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে প্রয়ােজনীয় পরামর্শ জানিয়ে ছােটো ভাইকে চিঠি লেখ। 

দিঘাপতিয়া, নাটোর । 
১৫ এপ্রিল ২০২২    
স্নেহের জুয়েল 
আমার ভালােবাসা ও দোয়া নিস। জেএসসি পরীক্ষায় তুই জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিস জেনে খুব খুশি হয়েছি। তাের এরূপ অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন রইল । ভবিষ্যতেও তুই এরকম কৃতিত্ব দেখাবি বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। 

তই বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে চাস এবং এ বিষয়ে আমার পরামর্শ চেয়েছিস। প্রথমেই বলব, তুই যুগােপযােগী সিদ্ধান্ত নিয়েছিস এবং তাের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ একমত। আমরা এখন একুশ শতকের মানুষ; বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর অগ্রগতি নিয়ে এই শতকে আমরা পদার্পণ করেছি। প্রতিনিয়ত পৃথিবী বদলে যাচ্ছে। নতুন পৃথিবীতে মানুষ এখন নতুন স্বপ্নে বিভাের। তুই নিশ্চয়ই এটা জানিস যে, পৃথিবীর এই দ্রুত বদলে যাওয়ার মূলে রয়েছে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি। আর এই আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির অন্যতম অবদান হলাে ইন্টারনেট। ইন্টারন্যাশনাল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সার্ভিসই ইন্টারনেট নামে পরিচিত। এটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কসমূহের একটি বিশ্বব্যবস্থা। যেহেতু তাের নিজের একটি কম্পিউটার রয়েছে এবং কম্পিউটার সম্পর্কে অল্প-বিস্তর ধারণাও আছে, সেহেতু ইন্টারনেট ব্যবহার সম্পর্কে তাের এখন থেকেই সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়ােজন। তুই জেনে অবাক হবি যে, ইন্টারনেট একটি বিশাল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম যার বিস্তৃতি বিশ্বময়। বিশ্বের হাজার হাজার বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ কোটি কোটি লােকের ব্যক্তিগত কম্পিউটারের সঙ্গে যােগাযােগ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেটের শত-সহস্র ব্যাবহারিক সুবিধার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলাে দেশ-বিদেশের সকল প্রকার শিক্ষা ও গবেষণার যাবতীয় তথ্য সহজভাবে জানা। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাংলাদেশে বসে আমেরিকার 'ইউনাইটেড স্টেট অব কংগ্রেস' বা 'হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিসহ' বিশ্বের যেকোনাে লাইব্রেরির সঙ্গে যােগাযােগ স্থাপন করা যায় এবং দুস্প্রাপ্য তথ্যাদি জানা যায়। 

বাংলাদেশে ইতােমধ্যেই ইন্টারনেটের ব্যবহার দ্রুত প্রসার লাভ করেছে। কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বাংলাদেশের টেলিযােগাযােগসহ কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আমদানি-রপ্তানি, সরকারি-বেসরকারিসহ অনেক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে অটোমেটিক ডিজিটাল পদ্ধতিতে। চাকরি সংক্রান্ত তথ্য, ইন্টারনেট বা অনলাইনে আবেদনপত্র জমা, সরকারি বিভিন্ন ফরমু, জাতীয় পরীক্ষার ফল, অনলাইনে পণ্য বেচাকেনা, দেশি-বিদেশি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য, ডিজিটাল ফটো ও ভিডিও এবং শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণসহ নানা বিষয়ে ইন্টারনেটের ব্যবহার আজকাল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আশা করা হচ্ছে, ক্রমান্বয়ে সমগ্র বাংলাদেশকে পরিণত করা হবে ডিজিটাল বাংলাদেশে। তাই ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিশ্বময় জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে তুই হয়ে উঠতে পারিস আধুনিক বিশ্বের একজন সচেতন ও সৃজনশীল নাগরিক। তবে ইন্টারনেটের সােসাল নেটওয়ার্কিং যেমন-- ফেইসবুক, টুইটার, ব্লগিং ইত্যাদিসহ আরও কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে, যেগুলাে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধান ও সচেতন হতে হবে; যেন ইন্টারনেট তাের জন্য কুফল বয়ে না আনে । 

স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখিস । মনে রাখিস, সুস্থ দেহ ও মনই সফলতার চাবিকাঠি। ভালাে থাকিস। তাের নিরন্তর মঙ্গল কামনা করে এখানেই শেষ করছি।
ইতি          
তাের বড়াে ভাই 
আলম       

[ পেত্র লেখা শেষে খাম একে খামের ওপরে ঠিকানা লিখতে হয় ]


Next Post Previous Post