বাংলা রচনা : ইভটিজিং

ইভটিজিং, যৌন হয়রানি

ইভটিজিং
অথবা, যৌন হয়রানি 
অথবা, ইভটিজিং-এর কারণ ও প্রতিকার

[ সংকেত: ভূমিকা; ইভটিজিং বা যৌন হয়রানি; যৌন হয়রানির ধরন; যৌন হয়রানির কারণ; যৌন হয়রানির কুফলযৌন হয়রানি প্রতিরােধের উপায়; উপসংহার। ]

ভূমিকা : বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার মধ্যে ইভটিজিং বা যৌন হয়রানি একটি নিন্দিত সামাজিক সমস্যা। কত প্রতিদিন, প্রতি মুহুর্তে হাজারও নারী ইভটিজিং-এর শিকার হচ্ছে। যুবসমাজে যৌন হয়রানি ক্যানসারের চেয়েও ভয়াবহ বনভিতে পরিণত হয়েছে। আধুনিক সভ্যতা, সামাজিক মূল্যবােধ, ন্যায়-নীতি, নারীর প্রতি সম্মানবােধ ও মনুষ্যত্ববােধকে বিসর্জন দিয়ে একদল অসভ্য শ্রেণির পুরুষ ইভটিজিং করে বেড়াচ্ছে। এদের অসভ্য আচরণের শিকার হয়ে অনেক মেয়ে আত্মহত্যা করছে আবার অনেকে প্রতিশােধপরায়ণ হয়ে অস্বাভাবিক জীবনে প্রবেশ করেছে, আবার কোনাে মেয়ের পরিবারের সদস্যরা প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইভটিজিংকারীর হাতে খুন হচ্ছে, কেউবা ইভটিজিংকারীকে খুন করে খুনি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তাই ইভটিজিং বা যৌন হয়রানি প্রতিরােধ করতে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে । 

ইভটিজিং বা যৌন হয়রানি : ইভটিজিং একটি অশ্লীল ভাষা (Slang Language)। অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে নারীদের উত্ত্যক্ত বা হয়রানি করাকে আমাদের দেশে ইভটিজিং বা যৌন হয়রানি বলা হয় । কিন্তু আসলে ইভটিজিং হলাে এক ধরনের ইউফেমিজম বা। নির্লজ্জ যৌন প্রবৃত্তি নিবারণে নারীকে ব্যবহার করা, যা অন্যান্য দেশে যৌন নিপীড়ন (Sextual harassment) হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমেরিকান কর্নেল অ্যাস্টিভিস্টরা ১৯৭৫ সালে শব্দটি ব্যবহার করেন । যৌন হয়রানি বলতে আমরা বুঝি— বখাটে বা সন্ত্রাসী কর্তৃক রাস্তাঘাটে নারীদের একা পেয়ে সুযােগ বুঝে বাচনিক, অবাচনিক অথবা শারীরিক কিংবা মানসিক যেকোনােভাবে উত্ত্যক্ত করা । খুব সহজভাবে বলা যায়, নারীদের স্বাধীন চলাচলে বিঘ্ন ঘটানােই হলাে যৌন হয়রানি । এই যৌন হয়রানি বাংলাদেশে সবচেয়ে বড়াে সামাজিক সমস্যায় রূপ নিয়েছে। 

যৌন হয়রানির ধরন : যৌন হয়রানি একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। আমাদের দেশে গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-নগরে সবখানে মেয়েরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে যৌন হয়রানি মেয়েদের জন্য অভিশাপে রূপ নিয়েছে। অসভ্য ও বখাটে শ্রেণির পুরুষেরা প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে মেয়েদের ওপর যৌন হয়রানি করেই চলেছে । নিমে বখাটে কর্তৃক যৌন হয়রানির বিভিন্ন ধরন। 

আলােচিত হলাে :

কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি : বখাটে পুরুষেরা এককভাবে কিংবা দলীয়ভাবে রাস্তাঘাটে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। এরা হাত, চোখ বা ইশারার মাধ্যমে মেয়েদের বিরক্ত করে। এতে মেয়েরা নির্বিকার থাকলে তারা কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করে এবং অদ্ভুত উপায়ে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। তাদের অসভ্য ও কুরুচিপূর্ণ ইঙ্গিতে মেয়েরা লজ্জা পেলে তারা খুব খুশি হয়ে উল্লাস করে। এমন অসভ্য শ্রেণির পুরুষেরা এক পর্যায়ে মেয়েদের প্রতি মারাত্মক অশােভন আচরণ করে। 

বখাটেদের উৎপাত : গ্রামে-গঞ্জে, নগর-বন্দরে সবখানে কিছু বখাটে পুরুষ থাকে, যারা মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে মনের তৃষ্ণা মিটাতে চায়। এই শ্রেণির পুরুষেরা স্কুল, কলেজ, রাস্তার মােড়, পাড়া বা মহল্লার দোকানের সামনে আড্ডা দিতে থাকে। সুযােগ পেলেই তারা মেয়েদের উদ্দেশ্যে নানা অশালীন কথা বলা শুরু করে এবং মেয়েদের বিভিন্নভাবে নাজেহাল করার চেষ্টা চালায়। এই ধরনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক সময় মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সৃষ্টি হয়। 

প্রেম নিবেদন : বখাটে ছেলেরা রাস্তাঘাটে ওতপেতে বসে থাকে মেয়েদের যৌন হয়রানি করার আশায় । সুযােগ পেলেই তারা মেয়েদের কাছে প্রেম নিবেদন করে। মেয়েরা তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে বখাটেরা একতরফাভাবে জোর খাটাতে চায়। এতে মেয়েরা যেমন ব্ৰিত হয় তেমনি লজ্জিত ও অপমানিত বােধ করে। বখাটেদের একতরফা প্রেম নিবেদন যৌন হয়রানির একটি জঘন পর্যায়। 

অশ্লীল ভাষা ব্যবহার : বখাটে ছেলেরা রাস্তাঘাটে ইশারা-ইঙ্গিতের মাধ্যমে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে ব্যর্থ হলে, প্রেম প্রস্তাবে প্রত্যাখ্যাত হলে মেয়েদের উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে। বারবার অশ্লীল কথা বলে তারা মেয়েদের ব্ৰিত করতে থাকে। ফলে তা থেকে যেকোনাে সময় অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম হতে পারে।

শারীরিক লাঞ্ছনা : যৌন হয়রানির সবচেয়ে জঘন্য ও অশালীন কাজ হলাে শারীরিক লাঞ্ছনা। বাংলাদেশের মেয়েরা বিভিন্নভাবে শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার হয়। অসভ্য ছেলেরা সবসময় সুযােগ খোজে মেয়েদের স্পর্শ করার জন্য। রাস্তায় চলাচলের সময় মানুষের ভিড়ে, যানবাহনে ওঠা-নামার সময় বখাটেরা মেয়েদের শরীরের যেকোনাে স্থানে হাত দেওয়া, শরীরে ধাক্কা দেওয়া, চিমটি কাটা, গা ০ ঘেঁষে দাঁড়ানাে, জড়িয়ে ধরা, এমনকি পায়ে পা লাগিয়ে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। এটি যৌন হয়রানির সবচেয়ে ভয়াবহ পর্যায় । এর। ফলে মেয়েরা যেমন লাঞ্ছনার শিকার হয় তেমনি আত্মহননের পথ বেছে নেয়। তাছাড়া যৌন হয়রানির শিকার মেয়েটির পরিবারের ছেলেদের সাথে বখাটেদের মারামারি এমনকি খুন-খারাবিও ঘটতে পারে।

মেয়ে পরিবারে বখাটেদের হামলা : সমাজে কিছু অসভ্য শ্রেণির মানুষ থাকে, যারা নিজের সম্মানের কথা চিন্তা করে না এমনকি অন্যের সম্মানের ওপর আঘাত করতেও দ্বিধা করে না। আত্ম-সম্মানহীন ছেলেদের হাতে মেয়েরা যৌন হয়রানির শিকার হয়। এর প্রতিবাদ করতে গিয়ে মেয়েরা যেমন লাঞ্ছনায় পড়ে তেমনি তার আত্মীয়-স্বজনদের ওপর বখাটেরা হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি, মারাত্মক জখম, খুন, ভাঙচুর, থানা-পুলিশের মতাে ঘটনা ঘটে থাকে। এছাড়া বখাটেরা মেয়েদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযােগ, লুটপাট এবং এসিড নিক্ষেপের মতাে জঘন্য অপরাধ করে থাকে। এতে পরিবার এবং সমাজজীবনে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। 

প্রযুক্তির অপব্যবহার : প্রযুক্তি আমাদের যেমন উপকার করছে তেমনি অপকারও করছে। প্রযুক্তির অপব্যবহারে যৌন হয়রানির মাত্রা এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। মােবাইলে মেয়েদের নম্বরে বারবার কল বা মিসড কল দেওয়া, অশ্লীল ছবি, গান, ভিডিও প্রদর্শন করা, ইন্টারনেটে নানা অশ্লীল ছবি প্রকাশ করা, সিডি ও ভিডিওতে পর্নো ছবি ধারণ করে এসব ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে মেয়েদেরকে ব্ল্যাকমেইল করা এবং কম্পিউটারে, মােবাইলে, গানের সাথে নগ্ন ছবি জুড়ে দিয়ে মেয়ে ও তার পরিবারকে হেয় করা বর্তমান প্রযুক্তির নিন্দনীয় দিক। 

যৌন হয়রানির কারণ : বাংলাদেশে যুবসমাজে যৌন হয়রানির প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। তারা সব বয়সেই এমন নির্লজ্জ কাজ করে থাকে। বিভিন্ন কারণে যৌন হয়রানির মতাে অশ্লীল কাজ ঘটে থাকে। যেমন— নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন না করা, নারীকে মূল্যায়ন করা, বেকারত্ব, অশিক্ষা ও অর্ধশিক্ষা, পরিবার থেকে নৈতিক শিক্ষার অভাব, পারিবারিক ও রাজনীতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়, পাশ্চাত্য সংস্কৃতির বিস্তার, কঠোর আইন ও তার সুষ্ঠু প্রয়ােগের অভাব, মেয়েদের ভােগ্য পণ্য মনে করা, কিছু নারীর অশালীন পােশাক পরিধান করা, সামাজিক সচেতনতার অভাব ও মূল্যবােধের অবক্ষয়, অপসংস্কৃতির বিস্তার, পর্নো ছবির প্রচার, মাদকে অবাধ আসক্ত হওয়া, মেয়েদের অল্পতে ভীতু হওয়া ও প্রতিবাদ না করার অভ্যাস প্রভৃতি। 

যৌন হয়রানির কুফল : বাংলাদেশে যৌন হয়রানির কুফল অনেক বেশি। আমাদের দেশে যৌন হয়রানি একটি সামাজিক ক্যানসার । এই ক্যানসারের শিকার হয়ে থাকে বাংলাদেশের অসংখ্য নারী । আর এই ঘটনা বেশিরভাগ ঘটে থাকে স্কুল, কলেজ ও কর্মস্থলের আশেপাশে। যৌন হয়রানির ফলে নারীরা যেমন বিপর্যস্ত হয় তেমনি অনেকে আত্মহত্যা করে, অনেকে অকালে পড়ালেখা বন্ধ করে ঘরে বসে থাকে, আবার বাধ্য হয়ে অনেক পরিবার অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেয়, অনেক নারী চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়, বখাটেদের বাধা দিতে গিয়ে অনেকে জীবন হারায়। ফলে দেশ ও সমাজ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে । 

যৌন হয়রানি প্রতিরােধের উপায় : যৌন হয়রানি বাংলাদেশে একটি মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি। এ ব্যাধি দেশ ও নারী সমাজের অবক্ষয়ের সবচেয়ে বড় কারণ। তাই আমাদের দেশকে সামাজিক ব্যাধি মুক্ত করতে হবে । যৌন হয়রানি প্রতিরােধে আমরা নিমােক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি :

সচেতনতা বৃদ্ধি : যৌন হয়রানি মানব সমাজে একটি লজ্জাকর সমস্যা। এই সমস্যা দেশ ও জাতিকে অবনতির দিকে নিয়ে ' সভ্য সমাজ কখনাে নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানিকে স্থান দেয় না। যৌন হয়রানি প্রতিরােধ করতে নারী, পিরবার, ” জনগণকে সচেতন থাকতে হবে। এতে সমাজ থেকে যৌন হয়রানি নিমূল করা সম্ভব হতে পারে।

কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন : বাংলাদেশে বেকারত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে যৌন হয়রানি। যৌন হয়রানির মতাে জঘন্য অপরাধ সমাজে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই এই ধরনের অসামাজিক কাজের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করা প্রয়ােজন এবং তা বাস্তবায়ন করা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করলে বখাটেরা ভয় পেয়ে যৌন হয়রানি করা থেকে বিরত থাকবে। 

দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান : নারীদের উত্ত্যক্তকারী বখাটেদের চিহ্নিত করে খুব দ্রুত আইনের আশ্রয় নিতে হবে। পুলিশের হাতে বখাটেদের ধরিয়ে দিতে হবে এবং আইনি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব সহকারে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। এতে একজনের শাস্তি দেখে অন্যেরা যৌন হয়রানি থেকে বিরত থাকবে। এভাবে দিন দিন যৌন হয়রানি হ্রাস পাবে। 

মেয়েদের সচেতন হতে হবে : যৌন হয়রানি রােধ করতে হলে মেয়েদের সচেতন হতে হবে এবং একে অপরকে সহযােগিতা করতে হবে। মেয়েরা যদি নিজেদের সাহসিকতার পরিচয় দিতে পারে এবং ঐক্যবদ্ধ হয়ে চলে তাহলে বখাটে ছেলেরা ভয় পাবে এবং যৌন হয়রানি থেকে বিরত থাকবে। মেয়েদের সাহসিকতা যৌন হয়রানি প্রতিরােধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। 

ভ্রাম্যমাণ আদালত ও অভিযােগ কেন্দ্র চালু : যৌন হয়রানি বন্ধে বাংলাদেশ সরকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে ৫০৯ ধারা সংযােজন করে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালু করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাৎক্ষণিকভাবে বখাটেদের বিচারের মুখােমুখি করে। জেল, জরিমানা ও কারাদণ্ড দিতে পারে । তাছাড়া মেয়েদের নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরে একটি অভিযােগ কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এই অভিযােগ কেন্দ্রের মাধ্যমে যৌন হয়রানি হাস করা সম্ভব হবে। 

উপসংহার : বাংলাদেশে যৌন হয়রানি অন্যতম সামাজিক সমস্যা। এই সমস্যার কারণ চিহ্নিত করে দ্রুত এর প্রতিকার করা জরুরি। আমাদের দেশের ছাত্রী এবং নারী সমাজকে যৌন হয়রানি নামক অভিশাপ থেকে মুক্তি দেওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। আর নারী সমাজকে এই অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে হলে সমাজ থেকে বখাটেদের নির্মূল করতে হবে এবং বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আর এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে হবে । তাছাড়া বখাটেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
Next Post Previous Post
2 Comments
  • Unknown
    Unknown ২০ নভেম্বর, ২০২১ এ ১০:০৫ PM

    নৌকা ভ্রমণ

    • Hasibul
      Hasibul ২২ নভেম্বর, ২০২১ এ ১:১৮ PM

      আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।

Add Comment
comment url