সংলাপ লেখার নিয়ম

সংলাপ লেখার নিয়ম
সংলাপ লেখার নিয়ম

সংলাপ :

দুই বা ততোধিক ব্যক্তির পারস্পরিক কথােপকথনকে সংলাপ বলা হয়। প্রাত্যহিক জীবনে আমরা প্রতিনিয়ত একে অপরের সাথে কথা বাল। লক্ষ করলে দেখতে পাব এর অধিকাংশ কথাই বিচ্ছিন্ন ও অসম্পূর্ণ এবং যথাযথ শব্দ প্রয়ােগ বা বাক্য বিন্যাস সুসংহত নয়। কিন্তু লিখিত সংলাপে বিচ্ছিন্ন বা অসম্পূর্ণ বাক্য কাম্য নয়। তাকে শুধু ভাষাগত সম্পূর্ণতা দান করলেই হবে না, অর্থগত পূর্ণতাও দিতে হবে। সংলাপ হলাে একটি আকর্ষণীয় বাকৌশল। সংলাপ রচনায় কাল্পনিক ভঙ্গি প্রয়ােগ করতে হয়। ফলে কল্পনার জাল বিস্তারের নিপুণতা অর্জন করা যায়। 

সংলাপের বৈশিষ্ট্য :

১. সংলাপ চরিত্রানগ হওয়া বাঞ্ছনীয়। চরিত্রের ধরন বুঝে উপযুক্ত সংলাপ রচনা করতে হবে।
২. সংলাপ সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত। 
৩. সংলাপের ভাষা সহজ-সরল, প্রাঞ্জল ও সুস্পষ্ট হতে হবে । 
৪. পূর্ববর্তী সংলাপের সাথে পরবর্তী সংলাপের একটি যােগসূত্র থাকতে হবে। 
৫. ভাষায় গতিশীলতা থাকতে হবে, তা না হলে সংলাপ নিছক বক্তা ও শ্রোতার উত্তর-প্রত্যুত্তরে পরিণত হবে। 
৬. সংলাপ বিষয়বস্তু নির্ভর হতে হবে। অর্থাৎ কোন্ ধরনের সংলাপ রচনা করতে হবে তা ভালােভাবে বুঝে ভাষাগুলাে মনের মধ্যে গুছিয়ে নিতে হবে, যাতে বিষয়টির উপস্থাপনা ও পরিণতির মধ্যে একটি সামঞ্জস্য থাকে। মনে রাখা প্রয়ােজন, ক্ষুদ্র পরিসরের এই সংলাপ দিয়ে কোনাে বৃহৎ বিষয় উপস্থাপন সম্ভব নয়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ের তথ্য যাতে ৰ্বিাচিত বিষয়ের মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করা সম্ভব হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। 

শিক্ষার্থীদের অনুশীলনের জন্য কতিপয় সংলাপের নমুনা  :

১. সম্প্রতি পড়া একটি বই সম্পর্কে দুবন্ধুর কথােপকথন রচনা কর।

লিসা : দীর্ঘ একটা বন্ধ পেলাম । ভাবতেই মনটা ফুরফুরে লাগছে । 

লিটন : কিন্তু গায়ে হাওয়া লাগিয়ে বেড়ানাের তাে কোনাে সুযােগ নেই। পাঠ্যবইয়ের বাইরে তাে যাওয়া যাচ্ছে না। পড়াশুনার যা চাপ। 

লিসা : পাঠ্যবইয়ের পড়া হজম করার জন্য মাঝে মাঝে পাঠ্যবই বহির্ভূত পুস্তকও পাঠ করা প্রয়ােজন। জানিস তাে? 

লিটন : কেন, তুই আবার নতুন কোনাে বই পড়লি নাকি? 

লিসা : হ্যাঁ, অসাধারণ একটি বই পড়েছি । লাল নীল দীপাবলি । 

লিটন : হুমম, হুমায়ুন আজাদ স্যারের লেখা বই। আমার পড়া হয়নি। অসাধারণ কেন? 

লিসা : এটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস। অসাধারণ এর ভাষা। মানুষ মানুষকে ভালােবাসতে পারে এটা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষ তার মাতৃভাষাকে এত গভীরভাবে ভালােবাসতে পারে! মাতৃভাষায় রচিত সাহিত্যকে ভালােবাসতে পারে প্রিয়জনের মতাে! আমি মুগ্ধ হয়েছি লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি দেখে । অবাক ব্যাপার কি জানিস? তিনি তাঁর ভালােবাসা আমাদের মধ্যে সঞ্চারিত করেছেন। এটা তার বিরাট কৃতিত্ব।

লিটন : আমি তাে ইতিহাসকে ভয় পাই । আমার কি ভালাে লাগবে? 

লিসা : অবশ্যই। বইটির ভাষাই তােকে আকৃষ্ট করবে। তুই স্বেচ্ছায় আগ্রহ নিয়ে বইটি পড়বি বলে আমার বিশ্বাস। 

লিটন : তাের বইটা কি আমাকে দিতে পারিস? 

লিসা : অবশ্যই।

লিটন : তােকে ধন্যবাদ এমন ভালাে একটি বইয়ের খোজ দেওয়ার জন্য। 

লিসা : তােকেও ধন্যবাদ।

Next Post Previous Post